জৈন্তাপুর (সিলেট) প্রতিনিধি: জৈন্তাপুর উপজেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে গাইড বই নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক দেখা দিয়েছে। শিক্ষকরা লেকচার ও পাঞ্জেরী গাইড বই কেনার জন্য শিক্ষার্থীদের উপর চাপ সৃষ্টি করছেন, যা শিক্ষার্থীদের চরম বিপাকে ফেলছে। এই বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়া শিক্ষকরা বই প্রকাশনী থেকে উপহার ও সম্মানী গ্রহণ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, পাঞ্জেরী ও লেকচারসহ বিভিন্ন গাইড বই প্রকাশনীগুলো তাদের ব্যবসা বাড়াতে শিক্ষকদের ব্যবহার করছে। জৈন্তাপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় এবং জৈন্তাপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক সরাসরি শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট গাইড বই কেনার জন্য চাপ প্রয়োগ করছেন। এতে শিক্ষার্থীরা স্বাধীনভাবে বই পছন্দ করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
অনেক শিক্ষার্থী নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী গাইড বই কিনলেও, শিক্ষকদের মনমতো না হওয়ায় সেই বই ফেরত দিতে বাধ্য হচ্ছেন। লাইব্রেরিগুলোও অনেক ক্ষেত্রে ফেরত নিচ্ছে না, কারণ শিক্ষার্থীরা বইয়ে নাম লিখে ফেলেছে। এ অবস্থায় অভিভাবক মহলে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
একটি সূত্রে জানা গেছে, ব্রিগেডিয়ার মজুমদার উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মিলন তালুকদার এবং ওবায়দুল কাদের, জৈন্তাপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক শাহজাহান, শুক্ল দেব নাথ, ও মাহমুদুল হাসান সহ আরও কয়েকজন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের পাঞ্জেরী বা লেকচার গাইড বই কিনতে বাধ্য করছেন।
উপজেলার বেশিরভাগ শিক্ষার্থী দরিদ্র পরিবারের হওয়ায় বারবার গাইড বই কেনার সামর্থ তাদের নেই। এই ধরনের বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডে শিক্ষার পরিবেশ বিপন্ন হচ্ছে বলে মনে করছেন অভিভাবকরা। শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দ অনুযায়ী গাইড বই কিনতে পারলেও, শিক্ষকদের বাধ্যবাধকতা অমানবিক বলে অভিভাবকরা উল্লেখ করছেন।
জৈন্তাপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহানা জাফরিন রোজি বলেন, “আমার বিদ্যালয়ে কোন শিক্ষক গাইড বই বাণিজ্যে জড়িত আছেন কিনা জানা নেই। গাইড বই ব্যবহার নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। অভিযোগ পাওয়া গেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
উপজেলা মাধ্যমিক একাডেমিক সুপারভাইজার আজিজুল হক খোকন বলেন, “বর্তমান পাঠ্যক্রমে গাইড বইয়ের প্রয়োজন নেই। শিক্ষকেরা সহযোগিতা করলে ছাপা হওয়া বইয়েই শিক্ষার্থীরা ভালোভাবে শিক্ষা নিতে পারবে।”
স্থানীয় অভিভাবকরা এ বিষয়ে দ্রুত কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।